জন্মের ১৮ দিনে অ্যাসিডে ঝলসে যাওয়া সোনালী দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষা





সময়টা ২০০২ সাল। মায়ের কোলে ঘুমিয়েছিল ১৮ দিনের সোনালী।





পাশেই ছিলেন বাবা। রাত গভীর হতেই তাদের দিকে অ্যাসিড





ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। মা-বাবার সঙ্গে তখন সোনালীরও মুখ আর শরীরের বিভিন্ন অংশ ঝলসে যায়। তবে ১৮ দিনের সেই সোনালীর বয়স এখন ১৯ বছর। দিচ্ছেন এসএসসি পরীক্ষাও। সোনালী খাতুনের বাড়ি সাতক্ষীরার তালা উপজেলার নকাটি গ্রামে। তিনি নূর ইসলাম-খোদেজা দম্পতির মেয়ে। সোনালী এবার সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা থানার কুমিরা পাইলট গার্লস হাইস্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। জানা গেছে, বাঁশ কাটা নিয়ে প্রতিবেশীর সঙ্গে বিরোধের জেরে ২০০২ সালের ১৯ নভেম্বর রাত





১২টার দিকে সোনালীদের ঘরে অ্যাসিড ছুড়ে মারে দুর্বৃত্তরা। ওই সময় ১৮ দিন বয়সী সোনালীরও চোখ-মুখ, মাথা ও ঘাড় ঝলসে যায়। তখন মা-বাবার সঙ্গে সোনালীকে প্রথমে স্থানীয় মির্জাপুর হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। সেখান থেকে তাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেন স্বজনরা। সেখানেই দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা চলে তাদের। পরে সোনালীকে ঢাকায় এক বছর উন্নত চিকিৎসার আওতায় আনা হয়। এছাড়া এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে গ্রেফতারের পর দীর্ঘদিন জেল খাটেন আসামিরা। সোনালীর বাবা নূর ইসলাম বলেন, অ্যাকশন অ্যাইড বাংলাদেশ, স্বদেশ ও সেতুবন্ধন গড়ি নেটওয়ার্কের (এসবিজিএন) সহযোগিতায় পড়ালেখা চালাতে পেরেছে আমাদের ছোট্ট সোনালী। এজন্য আমরা তার শিক্ষক ও সব সংগঠনের প্রতি কৃতজ্ঞ। বিশেষ করে স্বদেশের নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত, অ্যাকশন অ্যাইড বাংলাদেশ’র নুরুন নাহারে প্রতি কৃতজ্ঞ আমরা। কুমিরা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শিক্ষক গৌতম কুমার দাশ বলেন, সব প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে এখন মাধ্যমিকের গণ্ডি পার করবে সোনালী। নিজের চেষ্টা আর মানুষের সহায়তা থাকায় মেয়েটি এতদূর আসতে পেরেছে। মানবাধিকার কর্মী ও স্বদেশ’র নির্বাহী পরিচালক মাধব চন্দ্র দত্ত বলেন, অ্যাকশন অ্যাইড বাংলাদেশ, স্বদেশ ও সেতুবন্ধন গড়ি নেটওয়ার্কের (এসবিজিএন) এবং দেশ-বিদেশের যেসব ব্যক্তি ও সংগঠন অ্যাসিড সারভাইভার সোনালীকে এ পর্যন্ত আসতে সহযোগিতা করেছে।