Uncategorized

‘আর কত বয়স হলে ভাতার কার্ড পাব আমি’

বয়সের ভারে ন্যুব্জ আবেদা খাতুন। বছর চারেক আগে স্ট্রোক হয়েছিল, এখন আর চলাফেরা করতে পারেন না ঠিকমতো। দিনের বেশিরভাগ

সময় কাটে বিছানায় শুয়ে। স্বামী বেঁচে থাকতে কোনোমতে দিনমজুরি করে সংসার চালাতেন। এখন সন্তানরাও দেখভাল করেন না। চিকিৎসা

করানো তো দূরের কথা, তিন বেলা আহার জোটানোই মুশকিল বয়সের ভারে নুইয়ে পড়া এ বৃদ্ধার! একটু সচ্ছলতার জন্য বয়স্ক ভাতার কার্ডের জন্য বেশ কিছু দিন ধরে ধর্ণা দিয়েছেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। অসহায় জীবনযাপন করা পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা পশ্চিমপাড়া গ্রামের মৃত পীর মোহাম্মদের স্ত্রী আবেদা খাতুনের ভাগ্যে জোটেনি ভাতার কার্ড। এখন তার দিন

কাটছে অতিকষ্টে। প্রতি সপ্তাহে ৩০০-৪০০ টাকার ওষুধ লাগলেও টাকার অভাবে কিনতে পারছেন না। সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, জাতীয় পরিচয়পত্র অনুযায়ী, ১৯৫২ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে জন্ম আবেদা খাতুনের। এতে তার বয়স এখন ৭০ বছর। সংসারে অভাব-অনটন থাকলেও জীবিত থাকাকালীন কখনও স্ত্রীকে কাজ করতে দেননি স্বামী পীর মোহাম্মদ। দুই ছেলে ও চার মেয়ে সন্তানের মধ্যে সবার বিয়ে হয়ে গেছে। দুই

ছেলে অনেক আগে থেকেই আলাদা থাকেন। স্বামীর রেখে যাওয়া সামান্য জায়গার ওপর কোনো মতে টিনের ছাপড়াঘরে বসবাস করেন আবেদা খাতুন। স্বামী মারা যাওয়ার কিছু দিন পর তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হন। চিকিৎসা করানোর সামর্থ্য ছিল না এই বৃদ্ধার। পরে স্থানীয় হাসপাতালে দেখানোর পর চিকিৎসক ব্যবস্থাপত্র লিখে দিয়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে আবেদা খাতুন যুগান্তরকে বলেন, ‘বয়স তো অনেক হলো। কখন মরি,

কখন বাঁচি তার তো ঠিক নাই! অনেক অভাবের মাঝেও কখনো কারও কাছে হাত পাতিনি। আশপাশের অনেকেই ভাতার টাকা পায়। কিন্তু আমি পাই না! কার্ডের জন্য কতবার মেম্বার-চেয়ারম্যানকে (পূর্বে যারা ছিলেন) বলেছি। কিন্তু করে দেয়নি। আর কত বয়স হলে ভাতার কার্ড পাব আমি?’ ছাইকোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরুজ্জামান নুরু যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি জানা ছিল না। আমি অবশ্যই উনার (আবেদা খাতুন) বাড়িতে যাব এবং খুব তাড়াতাড়ি ভাতার কার্ডের ব্যবস্থা করে দেব। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা রেজাউল করিম যুগান্তরকে বলেন, বিষয়টি আমার গোচরে আসেনি। বিগত দুই বছর ধরে তেমন বরাদ্দ পাচ্ছি না। আগামী অর্থবছরে শতভাগ

বরাদ্দ পাব বলে আশা করছি। এর পর যারা ভাতা পাননি বা আবেদা খাতুনসহ যারা ভাতা পাননি, তাদের আগামী অর্থবছরে ভাতার ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে।

Related Articles

Back to top button