চেয়ারম্যানের শিশু পুত্রকে কুপিয়ে হ’ত্যা’র পর যুবকের আ’ত্ম’হ’ত্যা






ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার ঢেউখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতির ৭ বছরের শিশুপুত্র রাফসানকে কুপিয়ে হত্যা





করা হয়েছে। হত্যায় জড়িত এরশাদ মোল্লা বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের একটি ওয়াচ টাওয়ার থেকে লাফ দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। এদিকে এ ঘটনায়





চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান রত্না (৩৫) গুরুতর আহত হয়েছেন। তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা। এ ঘটনার পর ঘাতকের ভাই ইমরানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ঘাতক এরশাদের স্ত্রীকে নিয়ে সালিশ বৈঠকের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এ হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা। এলাকাবাসী ও সদরপুর থানা





পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত কয়েকদিন আগে ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামের এরশাদ মোল্লার স্ত্রীকে নিয়ে গ্রাম্য সালিশ করে ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি। এরশাদ মোল্লা স্ত্রীকে বিভিন্ন সময় মারপিট করতো। এ নিয়ে সালিশ বৈঠক হয়। সেই বৈঠকে এরশাদ মোল্লাকে জরিমানা করা হয়। এতে ক্ষিপ্ত হন এরশাদ মোল্লা। চেয়ারম্যানকে শায়েস্তা করতে সুযোগ খুঁজতে থাকে এরশাদ। চেয়ারম্যান মিজানুর





রহমান বয়াতির পরিবার সদরপুর সদরের পোস্ট অফিসের পাশে শ্বশুরবাড়িতে অবস্থান করছিলেন। বুধবার দুপুরে এরশাদ মোল্লা ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাড়িতে ঢুকে হামলা করে। এ সময় চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান রত্না ও শিশুপুত্র রাফসানকে কুপিয়ে মারাত্মকভাবে আহত করে। হামলায় শিশু রাফসান ঘটনাস্থলেই মারা যায়। মারাত্মক আহত হন চেয়ারম্যানের স্ত্রী দিলজাহান রত্না। তাকে প্রথমে সদরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলার সময়





চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি বাড়িতে ছিলেন না। নিহতের খালা মুক্তা জানান, বিকাল ৩টার দিকে দুপুরের খাবার খেয়ে সবাই ঘুমিয়ে ছিলেন। এ সময় চিৎকার শুনে তিনি ঘরে ঢুকে দেখতে পান তার বোন ও ভাগ্নে খাটের নিচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এ সময় তিনি চিৎকার শুরু করলে ঘাতক বাড়ির পাশে একটি মার্কেটে অবস্থান নেয়। সেখান থেকে স্থানীয়রা ধাওয়া করলে সে আটরশি বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের একটি ওয়াচ টাওয়ারে উঠে পড়ে। সেখানে ঘণ্টা খানেক অবস্থানের পর সন্ধ্যা ৭টার দিকে উঁচু টাওয়ার থেকে নিচে লাফিয়ে পড়ে। এতে





ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। তিনি জানান, এলাকাবাসী ঘাতক এরশাদ মোল্লার ভাই ইমরানকে আটক করে মারপিট করে। পরে পুলিশ এসে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। কি কারণে তার বোন ও ভাগ্নেকে কুপিয়ে আহত ও হত্যা করা হয়েছে তা তিনি জানাতে পারেননি। এ বিষয়ে ঢেউখালী ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বয়াতি তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। চেয়ারম্যান পুত্রকে কুপিয়ে হত্যার পর ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামের বাসিন্দা এরশাদ মোল্লার বাড়িতে স্থানীয় বিক্ষুব্ধরা হামলা চালিয়ে আগুন দেয় এবং ভাংচুর করে। পরে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিস গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ঘটনার পর ঢেউখালী ইউনিয়নের হরিনা গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখা হয়েছে। সদরপুর





থানার ওসি সুব্রত গোলদার জানান, এ ঘটনায় ঘাতক এরশাদের ভাই ইমরানকে আটক করা হয়েছে। হত্যার পর ঘাতক এরশাদ টাওয়ার থেকে লাফিয়ে পড়ে আত্মহত্যা করেছে।