অভিন্ন শত্রুর মুখোমুখি ভারত-পাকিস্তান






নাজির আহমেদের মতে, পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি ঘটছে। ২০২১ সালের মে মাসে বিশ্বের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল এখানে। এবার আরও বেশি





গরম পড়েছে। গত সপ্তাহের তাপপ্রবাহ মানুষকে পাগল করে দিয়েছে। যদিও তা এপ্রিলের মতো না। গার্ডিয়ানের খবর বলছে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা





৪০ ডিগ্রি সেলসিয়িাস কিংবা স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত সাড়ে চার ডিগ্রি বেশি হলেই দাবদাহ ঘোষণা করা হয়। দুই চিরবৈরীর অভিন্ন শত্রু ভারত-





পাকিস্তানে উত্তাপ ছড়াচ্ছে দাবদাহ। মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা হিসেবে প্রকট হয়ে উঠেছে জ্বালানি সংকট। বিভিন্ন আঞ্চলিক ইস্যুতে দুই প্রতিবেশী পরস্পরের মুখোমুখি। কিন্তু সমানতালে দাবদাহে পুড়ছে দেশ দুটি। যেন নরক থেকে ছড়ানো আগুন আপাতত তাদের ছাড়ছে না। দুই লাখ বাসিন্দার তুরবাত শহরে বিদ্যুৎ থাকে-না বললেই চলে। দিনে ৯ ঘণ্টা লোডশেডিংয়ে অকার্যকর থাকে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র কিংবা





রেফরিজারেটর। নাজির আহমেদ বলেন, আমরা একটা জাহান্নামে আছি। পুরো উপমহাদেশে একই দৃশ্যপট। সোমবার (১৬ মে) ভারতের রাজধানী নয়াদিল্লির বিভিন্ন অংশে তাপমাত্রা ছিল ৪৯ দশমিক দুই ডিগ্রি সেলসিয়াস। গেল মার্চ থেকে শহরটিতে পঞ্চমবারের মতো তাপপ্রবাহ বইছে। এতে নাগরিক জীবন অচল হয়ে পড়েছে। মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকির পাশাপাশি মারাত্মক পানি সংকটের শঙ্কা প্রকাশ করেন কর্মকর্তারা। গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। ফ্রান্স টোয়েন্টিফোরের খবর বলছে, পাকিস্তানের বিশাল অঞ্চল ও প্রতিবেশী ভারতে এপ্রিল থেকেই আবহাওয়া





চরম রূপ নিতে শুরু করেছে। পাকিস্তানের আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, শুক্রবার (১৩ মে) সিন্ধ প্রদেশের জ্যাকোবাবাদ শহরে তাপমাত্রা ছিল ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। স্থানীয় শ্রমিক শফি মোহাম্মদ বলেন, মনে হচ্ছে, চারপাশে আগুন জ্বলছে। নাটকীয়ভাবে বিশ্বে দাবদাহ, প্রাণঘাতী বন্যা ও দাবানল বাড়ছে। বিবিসির খবর বলছে, সপ্তাহান্তে পাকিস্তানের কিছু অংশ ও ভারতের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে তাপমাত্রা পঞ্চাশ ডিগ্রি সেলসিয়িাস ছাড়িয়ে যেতে পারে। জীবন-জীবিকা হুমকিতে ভারতের আবহাওয়া অফিস বলছে, গত কয়েক দিন ধরেই হিমাচল প্রদেশ, হরিয়ানা, উত্তরাখণ্ড,





পাঞ্জাব ও বিহারের মতো রাজ্যগুলোতে তাপপ্রবাহ ক্রমাগত বাড়ছে। বিভিন্ন অঞ্চলে তাপমাত্রা দুই থেকে চার ডিগ্রি সেলসিয়াস পড়ে গলেও প্রচণ্ড গরম থেকে রেহাই মিলছে না। চলতি গ্রীষ্মে উত্তর ভারতে লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকিতে পড়েছে। তাপের তীব্রতা থেকে আপাতত রেহাই মেলার সম্ভাবনা নেই। স্বাভাবিকের চেয়ে তাপমাত্রা বাড়ছে দ্রুতগতিতে। প্রচণ্ড তাপের ক্ষতিকর প্রভাব লাঘবে পরিকল্পনা আঁটতে





মুখ্যমন্ত্রীদের নির্দেশ দিয়েছেন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দাবদাহ ভারতে সচরাচর ঘটনা, বিশেষ করে মে ও জুন মাসে। এ বছরে আগেভাগেই গ্রীষ্ম এসেছে। তাপমাত্রা বাড়তে থাকে মার্চের শুরু থেকেই। আর তখনই দাবদাহের প্রভাব শুরু হয়। পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশের সেচমন্ত্রী আদনান হাসান বলেন, বৃষ্টি ও বরফ কম থাকায় এ বছরে ইন্দুস নদী ৬৫ শতাংশ সংকুচিত হয়ে গেছে। এটি পাকিস্তানের গুরুত্বপূর্ণ জলপথ। খালিস্তান মরুভূমিতে পানিশূন্যতা ও হিটস্ট্রোকে ভেড়া, মেষের মতো বিভিন্ন গবাদি পশুও মারা গেছে। সবচেয়ে জনবহুল প্রদেশে





পাঞ্জাবকে ডাকা হয় পাকিস্তানের ‘খাদ্যঝুড়ি’ বলে। হাসান আদনান বলেন, পানির ঘাটতি এভাবে অব্যাহত থাকলে এখানে সত্যিকারের খাদ্য ঘাটতির ঝুঁকি আছে। কমে আসবে ফসল উৎপাদন। এবার আগেভাগেই দাবদাহ মার্চ থেকে গেল ১২২ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ গড় তাপমাত্রা দেখছে ভারত। থিংকট্যাংক দ্য সেন্টার ফর সায়েন্স অ্যান্ড ইনভায়রনমেন্ট জানিয়েছে, আগেভাগেই দাবদাহ বইছে প্রায় ১৫টি রাজ্যে। যার মধ্যে আছে উত্তরাঞ্চলীয় রাজ্য হিমাচল প্রদেশও। অথচ রাজ্যটি আরামদায়ক তাপমাত্রার জন্যই বিখ্যাত। স্থানীয় বায়ুমণ্ডলীয় বিভিন্ন কারণের সঙ্গে





চলমান দাবদাহের সম্পর্কে আছে বলে দাবি ভারতীয় আবহাওয়া অধিদফতরের (আইএমডি) জ্যেষ্ঠ বিজ্ঞানী নরেশ কুমারের। তার মধ্যে একটি দুর্বল ‘ওয়েস্টার্ন ডিস্টার্ব্যান্স’, যার অর্থ ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চল থেকে উৎপত্তি হওয়া অতিগ্রীষ্মমণ্ডলীয় ঝড়। এতে ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাঞ্চলীয় অংশে হঠাৎ শীতকালীন বৃষ্টি নিয়ে আসে। কিন্তু এবার তা ঘটছে না। বাংলাদেশের উত্তরের বিভিন্ন এলাকাসহ দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলীয় নেপালেও এই প্রাকবর্ষা দেখা যায়। এ ছাড়া অ্যান্টিস্লাইকোন বা প্রতীপ ঘূর্ণিঝড়েও মার্চে ভারতে তীব্র গরম, শুষ্ক আবহাওয়া নিয়ে আসে।





উচ্চচাপ অঞ্চলের বায়ু নিম্নমুখে ঘুরতে ঘুরতে চারপাশের নিম্নচাপবিশিষ্ট অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়লে তা প্রতীপ ঘূর্ণিঝড়। তাপ থেকে বাঁচার ঘরোয়া উপায় প্রখর তাপে দেশে আগুন-সংক্রান্ত দুর্ঘটনা বাড়তে পারে বলে শঙ্কা নরেন্দ্র মোদির। যে কারণে সবাইকে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারতের অনেক জায়গায় গ্রীষ্ম বিপর্যয় নিয়ে আসে, নিঃশ্বেষ করে দেয় মানুষকে। বিশেষ করে দেশটির উত্তর ও মধ্যাঞ্চলে। দেশজুড়ে লাখ লাখ শীতাতপ-নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র ও ওয়াটার কুলার বিক্রি হলেও তাপ প্রশমনে লোকজনকে নিজস্ব উপায় অবলম্বন করতে দেখা গেছে। লোডশেডিংয়ের কারণে এসব বৈদ্যুতিক উপায় প্রায় সময়ই কোনো কাজে আসে না। এ কারণে স্থানীয়ভাবে উদ্ভাবিত বিভিন্ন পন্থা অবলম্বন





করতে দেখা গেছে নাগরিকদের। যেমন, পানি ঠাণ্ডা রাখতে তারা মাটির জগ ব্যবহার করেন। কখনো-কখনো হিটস্ট্রোক থেকে বাঁচতে কাঁচা আম সারা শরীরে মাখেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ভারতে বর্তমানে আরও বেশি প্রখর ও বারবার তাপপ্রবাহ নথিভুক্ত করা হচ্ছে। এমনকি এই দাবদাহ স্থায়ী হচ্ছে দীর্ঘক্ষণ। বিরূপ আবহাওয়ার সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি লাগে দারিদ্র্য মানুষের ওপর। ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট ফর হিউম্যান সেটলম্যান্টসের জ্যেষ্ঠ গবেষক ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক আন্তঃসরকারি প্যানেলের (আইপিসিসি) লেখক ডা. চান্দানি সিং বলেন, তাপ থেকে রক্ষা পেতে খুব বেশি মানুষের কাছে উপকরণ নেই। দাবদাহ সহজেই তাদের আক্রান্ত করতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনে তাপপ্রবাহ জলবায়ু





পরিবর্তনের কারণেই এই দাবদাহ বলে জানিয়েছে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা। এক বিবৃতিতে সংস্থাটি বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন থেকে যেমনটি হওয়ার কথা ছিল, ভারত-পাকিস্তানের তাপমাত্রা তার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। দাবদাহ এখন নিয়মিত ঘটনা হলেও অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় তা এখন আগেভাগেই শুরু হচ্ছে। ভারতের গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আবহাওয়াবিদ্যা ইনস্টিটিউটের জলবায়ু বিজ্ঞানী রক্সি ম্যাথিউ কোল বলেন, চলমান দাবদাহের পেছনে বেশ কয়েকটি বায়ুমণ্ডলীয় কারণ রয়েছে। সেগুলোর সঙ্গে যোগ হয়েছে বৈশ্বিক উষ্ণায়ন। তার মতে, বৈশ্বিক উষ্ণায়নই চলমান তাপপ্রবাহের মূল উৎস। দেশটির জলবায়ু পরিবর্তন ইনস্টিটিউটের পরিচালক ডি শিবানন্দ পাই বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন বাদ দিলেও আরও কারণ আছে। যেমন জনসংখ্যা বৃদ্ধি। এতে সম্পদের ওপর চাপ তৈরি হচ্ছে। বিশ্বজুড়ে বন কেটে উজাড় করে দেওয়া হচ্ছে। কমে যাচ্ছে গাছপালা। পরিবহন ব্যবহারও বেড়েছে আগের তুলনায় অনেক। এসব কিছু তাপ বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। আরও পড়ুন: পাকিস্তানে প্রচণ্ড দাবদাহ পাকিস্তানের জলবায়ুমন্ত্রী শেরি রহমান বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আমাদের অস্তিত্ব এখন সংকটে। দেশের উত্তর থেকে দক্ষিণ পর্যন্ত





আমরা এই জরুরি অবস্থা অনুভব করছি। তিনি জানান, দাবদাহের কারণে দেশের উত্তরাঞ্চলে হিমবাহ নজিরবিহীন হারে গলে যাচ্ছে। এতে হাজার হাজার পরিবার বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছে। তাপমাত্রায় এই উত্তাপ কেবল ফসলই নষ্ট করছে না, পানি সরবরাহেও ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে। জলাধারগুলো শুকিয়ে যাচ্ছে। উৎসগুলোতে পানি নেই বললেই চলে। দাবদাহকে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের জন্য জেগে ওঠার ডাক হিসেবে আখ্যায়িত করে পাকিস্তানের সাবেক এই কূটনীতিক বলেন, বিশ্ব নেতারা এখনই কোনো পদক্ষেপ না নিলে জলবায়ু পরিবর্তন ও আবহাওয়া বিপর্যয় আরও কঠিন আকার ধারণ করবে। স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে যারা প্রখর তাপমাত্রায় নাগরিকদের সতর্ক থাকতে বলছেন ভারতীয় কর্মকর্তারা। তারা জানান, অপ্রাপ্তবয়স্ক, বয়স্ক ও দীর্ঘস্থায়ী রোগে আক্রান্তসহ নাজুক স্বাস্থ্যের লোকজন বেশি ঝুঁকিতে থাকবেন। দাবদাহের কারণে মৃত্যুহারে নজর দেওয়া দরকার। চান্দানি সিং বলেন, চরম আবহাওয়া জনজীবনকে কীভাবে আক্রান্ত করছে, সেদিকে খেয়াল রাখা উচিত





নীতিনির্ধারকদের। দাবদাহের কারণে মানুষের স্বাস্থ্য মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তার মতে, রাতেও যদি তাপমাত্রা চরম অবস্থায় থাকে, তবে শরীর নিজের অবসাদ দূর করার সুযোগ পায় না। এতে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে, চিকিৎসায় তাদের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করতে হচ্ছে। ভবিষ্যতের কথা মাথায় রেখে দীর্ঘস্থায়ী পরিকল্পনা গ্রহণ করা অপরিহার্য বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই গবেষক জানান, ভারতের এমন অনেক জায়গা আছে যেখানে তাপমাত্রা খুব বেশি না। কিন্তু উচ্চ-আর্দ্রতার সঙ্গে মেলালে মানুষের জীবন আরও কঠিন হয়ে পড়তে পারে। সেক্ষেত্রে ওয়েট-বালব তাপমাত্রার (ডব্লিউবিটি) বিষয়টিও বিবেচনা করা যায়। তাপ ও আর্দ্রতা একত্রিত হলে এই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তিনি বলেন, গ্রামীণ এলাকায় বহু শিশুকে টিনের চালার ছাউনিতে ক্লাস করতে দেখা যায়। সাধারণত টিনের চালায় তাপ এতটাই মারাত্মক হয়ে ওঠে,





যা সহ্য করা অনেক কঠিন। কংক্রিটে আটকে থাকা তাপ ডা. চান্দানি সিংয়ের মতে, আমাদের ভবনগুলো এমনভাবে তৈরি করা হয় যে, তাতে তাপ আটকে থাকতে পারে। এতে বায়ু চলাচলের সুযোগ কম রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক অঙ্গণে বহু উদ্ভাবনী কাজ আছে, যা আমরা অনুসরণ করতে পারি। শিল্প-যুগ শুরু হওয়ার পর থেকেই জীবাশ্ম জ্বালানি পোড়ানোর কারণে তাপ গিয়ে বায়ুমণ্ডলে আটকে থাকছে। এতে গড় তাপমাত্রা এক দশমিক এক শতাংশ বেড়েছে। বৈশ্বিক কার্বন-নিঃসরণ না কমিয়ে চক্রটি অব্যাহত রাখা হয়েছে। ডি শিবানন্দ পাই বলেন, দেশে দেশে কংক্রিটের সড়ক ও ভবন বাড়ছে। উপরিভাগে উঠে না এসেও এতে তাপ আটকে থাকতে পারে এসব স্থাপনায়। যা বাতাসকে অনেক বেশি গরম করে রাখছে। ফসল উৎপাদন ব্যাহত গম, ফল ও শাকসবজিসহ ফসল উৎপাদনে বিপর্যয় নিয়ে এসেছে দাবদাহ। তাপমাত্রা চরম রূপ নেওয়া ভারতীয় এলাকাগুলোতে এবার গম উৎপাদন কমেছে পঞ্চাশ শতাংশ। আর আপেল ও পিচ ফলের জন্য বিখ্যাত বেলুচিস্তানের মাস্তুং





জেলা। কিন্তু এবার সেখানে ফলনে লোকসান দেখছেন কৃষকেরা। মাসখানেক আগে ফল ধরা আপেল গাছের দিকে বিষণ্ণ চোখে তাকিয়ে ছিলেন হাজি গুলাম সারওয়ার শাহওয়ানি নামের স্থানীয় এক কৃষক। তার চোখেমুখে হতাশার ছাপ। অমৌসুমি শুষ্ক-তাপে গাছের ফল ঝড়ে পড়েছে। গাছ মারা যাচ্ছে। এ ছাড়া স্থানীয় গম ফসলেও দাবদাহের সরাসরি প্রভাবের কথা বলছেন কৃষকেরা। বায়ুমণ্ডলীয় এসব কারণের নেতিবাচক প্রভাব একেবারেই দৃশ্যমান। ভারতীয় কৃষকরা বলছেন, অনাকাঙ্ক্ষিত তাপমাত্রা বাড়লে তাদের গম উৎপাদন ক্ষতির মুখে পড়েছে। যা বিশ্বজুড়ে বিরূপ প্রভাব তৈরি করবে, দেখা দিতে পারে খাদ্যসংকট। তার সঙ্গে ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের কারণে সরবরাহ ব্যাহত হওয়ার ঘটনা তো রয়েছেই। হাজি গুলাম সারওয়ার বলেন, প্রথমবারের মতো আবহাওয়া আমাদের ফলস ধ্বংস করে দিয়েছে। চাষাবাদ কমে গেছে। খুবই অল্প পরিমাণ ফল পাওয়া গেছে। বিদ্যুৎ সংকট গরমে বেড়েছে বিদ্যুতের চাহিদা। অথচ ভারতের রাজ্যগুলোতে দিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময়ে





লোকজনকে বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে। পাশাপাশি আছে কয়লা ঘাটতির শঙ্কাও। লোডশেডিং চরম আকার ধারণ করেছে, গেল ছয় দশকের মধ্যে যা সর্বোচ্চ। ঝাড়খন্ড, হরিয়ানা, বিহার, পাঞ্জাব ও মহারাষ্ট্রে আট ঘণ্টার মতো বিদ্যুৎবিহীন থাকতে হচ্ছে বাসিন্দাদের। অভ্যন্তরীণ কয়লা সরবরাহে দেখা দিয়েছে ঘাটতি। আর আমদানি করা কয়লার দাম বেড়ে গেছে। দেশজুড়ে কয়লার পরিবহন বাড়াতে ৬০০টি যাত্রী ও পোস্টাল ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে হয়েছে ভারতের রেলপথকে। গলে যাচ্ছে হিমবাহ বৈশ্বিক গ্রিনহাউস গ্যাস নিৎসরণের জন্য এক শতাংশেরও কম দায়ী ২২ কোটি জনসংখ্যার দেশ পাকিস্তান। কিন্তু জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকা তালিকায় আট নম্বরে তারা। ২০২১ সালের এক গবেষণায় পরিবেশবাদী গোষ্ঠী জার্মানওয়াচ এমন তথ্য দিয়েছে। পাকিস্তানকে সবচেয়ে দারিদ্র্য জনসংখ্যার দেশে পরিণত করে দিতে পারে অতিরিক্ত তাপপ্রবাহ। এটির পাহাড়ি অংশগুলোতে সাত হাজারেরও বেশি হিমবাহ আছে, মেরু অঞ্চলের বাইরে যা সর্বাধিক। আরও পড়ুন: ভারতে তীব্র দাবদাহ শেষে স্বস্তির বৃষ্টি দ্রুত গলিত হিমবাহ লেকগুলোকে স্ফীত করে তুলতে পারে। এতে তীরগুলো ভেঙে বরফ, পাথর ও পানির ঢল নামতে পারে। হিমবাহ লেকগুলোতে এভাবে বন্যা দেখা দিতে পারে। গত সপ্তাহে গিলগিট-বালতিস্তান অঞ্চলে হিমবাহ গলিত আকস্মিক





বন্যায় একটি মহাসড়ক ডুবে গেছে। এপ্রিলে কর্মকর্তারা দাবি করেন, দেশটির অন্তত ৩৩টি লেক এমন বিপজ্জনক প্লাবনের ঝুঁকিতে আছে। * গার্ডিয়ান, এএফপি, ফ্রান্স টোয়েন্টিফোর ও আল-জাজিরা অবলম্বনে