‘আমি চলে যাচ্ছি, মানুষের দেনা শোধ করে দিও’






মাসুম বিল্লাহ, শরণখোলা (বাগেরহাট) থেকে: বাগেরহাটের শরণখোলায়





বিভিন্ন এনজিওর (পাওনাদারদের) দেনা পরিশোধের চাপ সামলাতে





না পেরে চিরকুট লিখে আব্দুল হক ওরফে আব্দুল্লাহ (৩৩) নামের এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। রবিবার (১৩ মার্চ) রাত দেড়টার দিকে উপজেলার খোন্তাকাটা ইউনিয়নের নলবুনিয়া গ্রামের নিজ বাড়িতে চালের পোকা দমনের ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হলে শরণখোলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনার পর মারা যান তিনি। এদিকে আত্মহত্যার আগে আব্দুল্লাহর হাতে লেখা একটি চিরকুট উদ্ধার করেছেন তার স্বজনরা। শরণখোলা থানা ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নলবুনিয়া গ্রামের মৃত আব্দুল হাসেম প্যাদার ছেলে ও নলবুনিয়া বাজারের একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী আব্দুল হক বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে মুদি মনোহরী ও চা বিক্রি করে আসছিলেন।





পাশাপাশি বিকাশের এজেন্ট ছিলেন তিনি। এতে তিনি ঋণগ্রস্থ হয়ে পড়েন। এই ঋণের বোঝা তাকে মানসিক ভাবে বিষন্ন করে তোলে। নিহতের স্ত্রী রিনা বেগম জানান, রবিবার (১৩ মার্চ) দিবাগত রাত ১টার দিকে দোকান বন্ধ করে বাড়ি এসে জানায় আমি আর পৃথিবীতে থাকবো না চলে যাচ্ছি মেয়েকে দেখে রেখো। আমার কাছ কারা কতো টাকা পাবে এবং আমি কার কাছে কতো পাবো সব খাতায় লিখে রেখেছি এই ছিল তার শেষ কথা। এর কিছুক্ষণ পর ঘরে থাকা চালের পোকা দমনের ট্যাবলেট খেয়ে বমি শুরু করে। পরে প্রতিবেশীদের খরব দিলে তারা তাকে উদ্ধার করে শরণখোলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করে। হাসপাতালে ভর্তির কিছুক্ষন পর রাত আড়াইটার দিকে তিনি মারা যান। স্থানীয় যুবলীগ নেতা মো. জাহিদুর রহমান মোস্তফা বলেন, ক্ষুদ্র চা দোকানের পাশাপাশি আব্দুল হক বিকাশের ব্যবসা করতেন। বিকাশ থেকে বেশ কিছু টাকা হ্যাক করে নিয়ে যাবার কারনে কয়েকদিন ধরে তাকে বিষন্ন মনে হচ্ছিল। পাওনাদারদের দেনা পরিশোধের চাপ সামলাতে না পেরে মানসিক চাপে আব্দুল হক চালের পোকা দমনের ট্যাবলেট খেয়ে আত্মহত্যা করেছেন। শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ সাইদুর রহমান বলেন, চিরকুটের বিষয়টি জানা নেই। দেনার চাপে আত্মহত্যা করেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এ ঘটনায় একটি অপমৃত্যু মামলা দায়ের করা হয়েছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য বাগেরহাট মর্গে পাঠানো হয়েছে।