জোড়া খুনের ‘রক্ত’ নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে ভূরিভোজ, মিলল চাঞ্চল্যকর তথ্য






নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার বাসিন্দা মো. সোহেল। একই উপজেলায়





তার শ্বশুরবাড়িও। হাতে জোড়া খুনের রক্ত নিয়েই শ্বশুরবাড়ি গিয়ে ভূরিভোজ





করলেন সোহেল। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত তিনি জামাই আদরে ছিলেন। পুলিশের হাতে ধরা খেতেই বেরিয়ে আসে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য। বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টার দিকে নরসিংদীর শিবপুরের বাঘাব ইউনিয়নের শ্রীফুলিয়া বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মহাসড়কের পাশ থেকে অজ্ঞাত দুই যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। দুটি লাশই ছিল বস্তাবন্দি। আঙুলের ছাপ ছাড়াও অন্যান্য তথ্য মিলিয়ে কিছু সময় পরই পুলিশ নিশ্চিত হয় নিহত দুই যুবক হলেন- পলাশ উপজেলার খানেপুর গ্রামের তোফাজ্জল হোসেনের ছেলে ২৫





বছর বয়সী রুবেল মিয়া ও শাহেপ্রতাব এলাকার ৩০ বছরের মো. জাহাঙ্গীর। এরপরই তদন্তে নামে পুলিশ। সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যে মূল আসামি সোহেলকে গ্রেফতার করা হয়। নরসিংদীর পুলিশ সুপার কাজী আশরাফুল আজীম জানান, পূর্ব পরিচয়ের সূত্র ধরে বুধবার রাতে রেন্ট-এ কারের চালক শাহজালালকে ফোন করে মাধবদীতে একটি ভাড়ার কথা জানান রুবেল। পরে রুবেল, শাহজালাল ও জাহাঙ্গীর একত্রিত হন। তারা তিনজন রেন্ট-এ কারের চালক। তিনজনের সঙ্গে ওই রাতেও প্রাইভেটকার ছিল। মাধবদী না গিয়ে তারা রায়পুরার খলাপাড়া এলাকায় যান। সেখানেই কৌশলে সোহেল ও তার সহযোগীরা তিনটি প্রাইভেটকার ছিনতাই করেন। এরপর টাকা ভাগবাটোয়ারা নিয়ে তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে সোহেল ও তার সহযোগীরা রুবেল এবং জাহাঙ্গীরকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। শাহজালাল ও অন্যরা কৌশলে পালিয়ে যান। জোড়া খুনের পর বৃহস্পতিবার সকালে শ্বশুরবাড়ি গিয়ে স্বাভাবিকভাবে চলাফেরা করতে থাকেন সোহেল। পুলিশ সুপার বলেন, সিলেট থেকে মাদক এনে বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করতেন তারা। মাদক ব্যবসার আধিপত্য ও টাকা লেনদেনের বিরোধে খুনের ঘটনা ঘটেছে। মূল আসামিকে অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত বেশকিছু আলামত উদ্ধার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয় তিনটি প্রাইভেটকারও। এক নারীকেও আটক করা হয়েছে। তার কাছ থেকে কাপড় নিয়ে দুজনকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ওই নারীর সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। শাহজালালও সন্দেহের বাইরে নন। পুলিশ সুপার আরো বলেন, সোহেলের বিরুদ্ধে রায়পুরা ও ঢাকার বাড্ডা থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। তিনি একজন দুর্ধর্ষ অপরাধী। জোড়া খুনে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।