‘আমার সেই গুণী ভাগ্নিডারে খুনিরা মেরে ফেলেছে’






অভিনেত্রী রাইমা ইসলাম শিমুকে পারিবারিক ও দাম্পত্য কলহের জেরে





(৩৫) হত্যা করা হয়েছে। অভিনেত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করেছেন তার





স্বামী খন্দকার শাখাওয়াত আলীম নোবেল। ঢাকার পুলিশ সুপার (এসপি) মারুফ হোসেন সরদার মঙ্গলবার ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। এসপি মারুফ হাসান বলেন, স্ত্রী শিমু হত্যার দায় স্বীকার করেছেন খন্দকার তার স্বামী শাখাওয়াত আলীম নোবেল। অভিনেত্রী শিমুর লাশ গুম করতে তাকে বন্ধু ফরহাদ সহায়তা করেছেন। দাম্পত্য কলহের জেরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। এ কথা জানতে পেরে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন শিমুর ভাইবোনেরা। বিষয়টি তারা ভাবতেই পারছেন না। কেন তাদের বোনকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করলেন নোবেল, সে প্রশ্ন রাখতে চান শিমুর বোন ফাতিমা নিশা। মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিহত ফাতিমা নিশা বলেন, আমার বোনের কোনো শত্রু ছিল না। ও নিজেও কখনও বলেনি যে ওর কোনো শত্রু আছে। নোবেলের সঙ্গে তার ১৮ বছরের সংসার। তারা প্রেম করে বিয়ে করেছেন। তবে নোবেল কেন এ কাজ করতে যাবেন? কী অপরাধ ছিল আমার বোনের? আপনারা লাশের ছবি দেখেছেন কিনা জানি না? এত নৃশংসভাবে মানুষ-মানুষকে খুন করতে পারে! শিমুর ছোট ভাই সাইদুল ইসলাম খোকন বলেন, আমার বোনকে এই সময়ে দাফনের জন্য আমতলী নেওয়া সম্ভব না। আজিমপুর কবরস্থানে





দাফন করা হবে। খোকন বলেন, শিমুর দুটি সন্তান রয়েছে। বড় মেয়ে রীত (১৭) এবং ছোট ছেলে রায়হান (৫)। ওরা এখন মা হারা হয়ে গেল। এসময় শিমুর একমাত্র বোন ফাতিমা নিশাও খুনিদের কঠোর শাস্তির দাবি জানান। তিনি আরও বলেন, কেন কে আমার বোনকে হত্যা করেছে, আমরা এখনও বুঝতেই পারছি না। আমার বোন জামাইয়ের সঙ্গে বোনের তেমন কোনো কলহ ছিল না। তাদের ১৮ বছরের সংসার, তারা লাভ ম্যারেজ করেছিল। তবে যে-ই এ হত্যা করুক, আমরা চাই, সঠিক বিচার হোক, আমরা মামলা করব, যোগ করেন ফাতিমা নিশা। শিমুর বাবা নুরুল ইসলাম ফোনে কেঁদে কেঁদে বলেন, আমার আদরের মেয়েটারে ওরা মেরে ফেলেছে। আমি আর কিছু চাই না এই মুহূর্তে। শুধু আমার মেয়ের হত্যাকারীদের ফাঁসি চাই। এদিকে শিমুর বড় মামা আনোয়ার হোসেন হাওলাদার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘মোর ভাগ্নিডারে ক্যানো ওরা মাইর্যাক হালাইছে। ও কী অপরাধ করছিল যে, এমন নির্দয়ভাবে খুন করতে হবে। আমি শিমু হত্যাকারীদের কঠোর শাস্তির দাবি জানাই।’ শিমুর ছোট মামা দেলোয়ার হাওলাদার বলেন, শিমু ছোটবেলা থেকেই দেখতে খুব সুন্দর ছিল। ওর অনেক গুণ ছিল। স্কুলজীবনে নাচ-গান নিয়ে থাকত। আমার সেই গুণী ভাগ্নিডারে খুনিরা মেরে ফেলেছে। এর বিচার চাই। শিমুর মামাত বোন আছমা বেগম বলেন, শিমু আপা অনেক ভালো মানুষ ছিল। আমাদের অনেক আদর করত। এখন কে এই আদর করবে। উল্লেখ্য, সোমবার দুপুরে কেরানীগঞ্জের হজরতপুর ব্রিজের কাছে আলিয়াপুর এলাকায় রাস্তার পাশে পড়ে থাকা বস্তা দেখে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ গিয়ে নারীর লাশ উদ্ধার করে। পরে সেটি নায়িকা শিমুর লাশ বলে শনাক্ত হয়। বর্তমানে রাজধানীর স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (মিটফোর্ড)তার মরদেহ রয়েছে। কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মো. আবু সালাম মিয়া জানান, লাশ বস্তায় ভরে রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয়েছিল। শিমুকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।